জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ জালিয়াতি করে নিজের নাম বীরাঙ্গনা গেজেটভুক্ত করার দায়ে দল স্থায়ীভাবে বহিষ্কার হলেন জয়পুরহাট সদর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আছমা বিবি।
আজ বুধবার জয়পুরহাট প্রেসক্লাবে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেবেকা সুলতানা ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবা বেগম নায়লা সাংবাদিকদের এ বিষয়ে বিস্তারিত বলেন।
তারা জানান, জয়পুরহাট সদর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান সদর উপজেলার সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আছমা বিবির জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বয়স ছিল ৮ বছর ৩ মাস। অথচ তিনি নিজেকে ১৯৭১ সালে ২১ বছরের তরুণী দাবি করে বীরাঙ্গনা স্বীকৃতি চেয়ে ২০১৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করেন।
সদর উপজেলায় কর্মরত ৫ সদস্যের নারী কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শাহনাজ সিগমা যাচাই-বাছাই না করেই অফিসের একজন পরিদর্শকের মাধ্যমে নির্ধারিত ফরম পূরণ করে ২৪ জুন প্রতিবেদন জমা দেন। যেখানে তিনি আছমা বিবিকে বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত করার সুপারিশ করেন।
পরে বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় বাসিন্দা, মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তীব্র প্রতিবাদ করেন। এক পর্যায়ে জয়পুরহাট পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজম আলী এসব অভিযোগ তদন্ত করার জন্য জেলা প্রশাসকের বরাবরে একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযোগকারী আওয়ামী লীগ নেতা আজম আলী জানান, আবেদনপত্রের সঙ্গে আছমা বিবি যে বয়স, জন্মনিবন্ধন, শিক্ষাগত যোগ্যতা, জেলা-উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও ইউপি চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন প্রত্যয়নপত্র সংযুক্ত করেছেন, সেগুলো প্রাথমিক তদন্তে জাল প্রমাণিত হয়েছে।
এ বিষয়ে জয়পুরহাট জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি মাহফুজা মণ্ডল রিনা বলেন, জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রকৃত বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধাদের হেয় প্রতিপন্ন করার তার এমন ঘৃণ্য অপচেষ্টা সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে। তাই আছমা বিবির সদর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদসহ সংগঠনের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।