ফোকাস ডেস্কঃ শীতকাল ইলিশের মৌসুম না হলেও বরিশালের বাজার পাওয়া যাচ্ছে প্রচুর ইলিশ। শুধু বরিশাল নয়,বরগুনা,পটুয়াখালী, ভোলাসহ দক্ষিণাঞ্চলের বাজারগুলো এখন ইলিশে সয়লাব। এই সময়ে ইলিশের এমন রমরমা অবস্থা আগে কখনো দেখা যায়নি।
বরিশালে ইলিশের সবচেয়ে বড় বাজার (মোকাম) পোর্ট রোডে। শীতে এ মোকামে সামুদ্রিক মাছের দাপট থাকে। সেখানে পুরো বাজার দখল করে আছে সদ্য ধরে আনা ইলিশ। ঘাটে নোঙর করা ট্রলারগুলোর খোল ভরে আছে রুপালি ইলিশে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতে এতসংখ্যক ইলিশ আগে কখনো দেখা যায়নি। আগের বছরগুলোতে এই সময়ে অল্পস্বল্প ইলিশ আসত। তাও আকারে ছোট, সেসব ইলিশ তেমন পরিপুষ্ট ছিল না। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম। মনে হচ্ছে সুদিন ফিরবে ইলিশের। গত শনিবার এই মোকামে ৫৫০ মণ ইলিশ এসেছে। রোববারও একই পরিমাণ ইলিশ এসেছে। সোমবার কিছুটা কমে ৪৫০ মণের মতো এসেছে। এই সময়ে এটা অবিশ্বাস্য ঘটনা।
জেলেদের কথায়, এই শীতে চিত্র পুরো ভিন্ন। নদীতে জাল ফেললে মনে হয় ইলিশের ভর মৌসুম চলছে। ভর মৌসুমে এবার ইলিশ তেমন মেলেনি। কিন্তু শীত মৌসুমে ইলিশের রমরমা বাজার সব কষ্ট মুছে দিয়েছে। দামও কম। ৭০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ ২৫ হাজার টাকায়। আর এক কেজির ওপরে ইলিশ প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ৩০ হাজার টাকায়। ৪৫০ থেকে ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি মণ ১২ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে পাইকারি বাজারে।
ইলিশ আহরণে বরিশাল বিভাগের ভূমিকা ক্রমেই বাড়ছে। গত ১০ বছরে এই বিভাগে ইলিশ ধরার পরিমাণ দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। পাশাপাশি কয়েক বছর ধরে দেশের মোট ইলিশের ৬৬ শতাংশের বেশি ইলিশ আহরিত হচ্ছে এই বিভাগ থেকে। চলতি অর্থবছরেও তা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন মৎস্য বিশেষজ্ঞরা।
মৎস্য বিভাগের হিসেব অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে মোট ইলিশ আহরণ হয়েছিল ৫ লাখ ১৭ হাজার ১৮৮ মেট্রিক টন। এর মধ্যে বরিশাল বিভাগ থেকেই আহরিত হয় ৩ লাখ ৩২ হাজার ২৫ মেট্রিক টন, যা দেশে মোট উৎপাদনের অর্ধেকের অনেক বেশি।
বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য বিভাগ সূত্র জানায়, বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ইলিশের জোগান দেয় ভোলা ও বরগুনা। ভোলায় গত অর্থবছরে ইলিশ আহরিত হয় ১ লাখ ৬১ হাজার ৮৩২ মেট্রিক টন ও বরগুনায় আহরিত হয় ৭০ হাজার ২৩৭ মেট্রিক টন।