ফোকাস ডেস্কঃ চট্টগ্রামে জনসভায় যাওয়ার পথে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর গাড়ি বহরে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যার দায়ে করা মামলার রায়ে পুলিশের পাঁচ সদস্যের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঘটনার ৩২ বছর পূর্ণ হওয়ার চারদিন আগে সোমবার বিকেল ৩টায় এ রায় ঘোষণা করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল জজ (ভারপ্রাপ্ত) ইসমাইল হোসেনের আদালত।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- তৎকালীন পুলিশের ইন্সপেক্টর গোপাল চন্দ্র মন্ডল ওরফে জে সি মন্ডল, হাবিলদার প্রদীপ বড়ুয়া, কনস্টেবল মোস্তাফিজুর রহমান, মমতাজ উদ্দিন ও মো. আবদুল্লাহ। এদের মধ্যে একমাত্র গোপাল চন্দ্র মন্ডল ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন। বাকিরা সোমবার রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে জনসভায় যাওয়ার পথে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে এলোপাতাড়ি গুলি চালায় পুলিশ। এ সময় পুলিশের গুলিতে ২৪ জন নিহত। পরে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের পতন হলে ১৯৯২ সালের ৫ মার্চ এ ঘটনায় বাদী হয়ে একটি গণহত্যা মামলা দায়ের করেন আইনজীবী মো. শহীদুল হুদা।
এর পর বেশ কয়েক বছর মামলাটি ঝুলে থাকলেও ১৯৯৬ সালে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে সেটি পুনরায় প্রাণ ফিরে পায়। তখন আদালতের নির্দেশে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় সিআইডিকে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীটি তদন্ত শেষে ১৯৯৭ সালের ১২ জানুয়ারি আদালতে তাদের প্রতিবেদন দাখিল করে। কিন্তু আদালত তখন অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালের ৩ নভেম্বর পুলিশের আট সদস্যকে অভিযুক্ত করে আদালতে দ্বিতীয় দফায় অভিযোগপত্র দাখিল করে সিআইডি।
শেখ হাসিনার জনসভায় ২৪ জনকে হত্যায় ৫ পুলিশের ফাঁসির রায়/ চট্টগ্রামে গণহত্যা: সাবেক ৫ পুলিশ সদস্যের মৃত্যুদণ্ড
চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ওইদিন আদালত মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য ১৯ জানুয়ারি রোববার দিন ধার্য করেন। মামলার আট আসামির মধ্যে তিনজন ইতোমধ্যে মারা যাওয়ায় আজ সোমবার পাঁচ জনের ফাঁসির আদেশ দেন বিচারিক আদালত।
মারা যাওয়া আসামিরা হলেন- চট্টগ্রামের তৎকালীন পুলিশ কমিশনার মীর্জা রকিবুল হুদা, কনস্টেবল আব্দুস সালাম ও বশির উদ্দিন।
এছাড়া ওইদিন পুলিশের গুলিতে নিহতরা হলেন- মো. হাসান মুরাদ, এথলেবার্ট গোমেজ কিশোর, মহিউদ্দিন শামীম, স্বপন কুমার বিশ্বাস, পঙ্কজ বৈদ্য, স্বপন চৌধুরী, বাহার উদ্দিন, অজিত সরকার, চান্দ মিয়া, রমেশ বৈদ্য, ডি কে চৌধুরী, বদরুল আলম, পলাশ দত্ত, গোবিন্দ দাশ, আব্দুল কুদ্দুস, শাহাদাত, আব্দুল মান্নান, সাজ্জাদ হোসেন, সবুজ হোসেন, বি কে দাশ, সমর দত্ত, কামাল হোসেন, হাসেম মিয়া ও মো. কাসেম।