ফোকাস ডেস্কঃ ভারতের অযোধ্যার ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদের আদলে বাংলাদেশে নির্মিত হচ্ছে একটি মসজিদ। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক রায়ের মাধ্যমে এই মসজিদের জায়গা দখল করে হিন্দুত্ববাদী সরকারের সহায়তায় সেখানে রামমন্দির নির্মানের ঘোষণা দেওয়ার পর বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের হৃদয়ে রক্ষক্ষরণ হয়েছে।
সেই স্মৃতি ধরে রাখতেই বাংলাদেশে প্রায় তিনবিঘা জমির ওপর ‘জামিয়াতুত তারবিয়াহ-কলাতিয়ায়’ এই মসজিদটি নির্মিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক রহ. এর সন্তান ও খেলাফত যুব মজলিসের সভাপতি বিশিষ্ট ওয়ায়েজ মাওলানা মামুনুল হক। সাথে সাথে তিনি উল্লেখ করেছেন এই মসজিদের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর ও হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদরাসার মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফী। আগামী ২৬ শে ফেব্রুয়ারী’ ২০২০ ইং তারিখ বুধবার বাবরী মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন শায়খুল ইসলাম আল্লামা আহমদ শফী।
মাওলানা মামুনুল হক ফেসবুকে তার নিজস্ব ফেসবুক পেজে এ বিষয়ে একটি আহবান জানিয়েছেন। সেখানে তিনি এই মসজিদ নির্মানের সহযোগী হতে ৩১৩ জনকে সদস্য হওয়ার আহবান জানিয়েছেন।
মাওলানা মামুনুল হক বাবরী মসজিদের আদলে নির্মিতব্য এই মসজিদ সম্পর্কে জানান, মুঘল সম্রাট বাবরের আদেশে ১৫২৮-২৯ মোতাবেক ৯৩৫ হিজরীবর্ষে ভারতের উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদ জেলার অযোধ্যা শহরে নির্মিত হয় ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদ । মসজিদ নির্মাণের কয়েক শত বছর পর উগ্রবাদী হিন্দুরা তাদের ধর্মের কল্পিত অবতার রামচন্দ্রের জন্মভূমির ভূয়া দাবি তুলে বিতর্ক সৃষ্টি করে এবং ১৯৯২ সালে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় প্রায় পাঁচশত বছরের প্রাচীন মসজিদটিকে শহীদ করে দেয় । বাবরী মসজিদের শাহাদাত বিশ্ব মুসলিমের হৃদয়ে জ্বালিয়ে দেয় চেতনার বহ্নীশিখা। বাংলাদেশে ঘটে তার সর্ববৃহৎ বিস্ফোরণ।
শায়খুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হকের নেতৃত্বে বাবরী মসজিদ লংমার্চের মাধ্যমে পরিচালিত হয় স্মরণকালের বৃহত্তর আন্দোলন। সে আন্দোলন বাবরী মসজিদ রক্ষায় বিশ্বজনমত গঠনে রাখে বিশাল ভূমিকা। কিন্তু বিশ্বজনমত, ন্যায়-নীতিবোধ এমন কি ন্যূনতম যুক্তিরও কোনো তোয়াক্কা না করে ভারতের সুপ্রীমকোর্ট বাবরী মসজিদকে তার যথাস্থানে হতে বিলুপ্তির নির্দেশ দেয় । ইতিহাসের কলংকজনক এ রায় শান্তিকামী বিশ্ববাসীর মনে ঘৃণার জন্ম দেয়।আর মুসলমানদের হৃদয়ে জ্বালিয়ে দেয় ক্ষোভের আগুন। তারা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি এমন নির্লজ্জ প্রহসন। সহ্য করতে পারেনি আল্লাহর ঘর পবিত্র মসজিদের এমন নির্মম শাহাদাত। মুসলিম হৃদয়ে হৃদয়ে উচ্চারিত হয় শপথের বাণী- হাজার বছর পর হলেও আমরা বাবরী মসজিদ পুন:উদ্ধার করব ! মুক্ত করব আমাদের পাঁচশত বছরের পবিত্র সিজদাহগাহ! বাবরী মসজিদের গম্বুজ থেকে আবার ধ্বনিত হবে আযানের সুমধুর সূর !
বাবরী মসজিদের রক্তস্নাত ইতিহাস ও বাবরী মসজিদ রক্ষায় শায়খুল হাদীস রহিমাহুল্লাহর ঈমানী আন্দোলনের চেতনাকে জাগরুক রাখতে জামিয়াতুত তারবিয়াহ-কলাতিয়া ক্যাম্পাসে “বাবরী মসজিদ” নামে একটি সুবৃহৎ মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে। আধুনিক নান্দনিকতার সাথে বাবরী মসজিদের আদলে প্রাচীন গম্বুজের মিশেলে তৈরি করা হয়েছে মসজিদটির স্থাপত্য নকশা, যা দর্শককে মনে করিয়ে দিবে বাবরী মসজিদের ইতিহাস আর আগামী প্রজন্মের হৃদয়ে জাগিয়ে তুলবে চেতনার মশাল!
মসজিদ নির্মানে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হওয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, তিন বিঘা জমির উপর নির্মিতব্য ইতিহাসের স্মারক এ মসজিদটির জমি ক্রয় ও নির্মাণব্যয় নির্বাহে ৩১৩ প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সংগ্রহের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে । ১ লক্ষ টাকা প্রদান স্বাপেক্ষে আপনিও পারেন বরকত পরশিত ৩১৩-এর একজন সৌভাগ্যবান সদস্য হতে ।