ফোকাস ডেস্কঃ যশোরের শার্শা উপজেলার একটি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ও তার কথিত সোর্সের বিরুদ্ধে থানায় আটক এক ব্যক্তির স্ত্রী ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন। তার দাবি, স্বামীকে আটকের পর ঘুষ দাবি করে না পেয়ে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে।
তবে গোরপাড়া ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) খাইরুল ইসলাম ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
পুলিশ সুপার মঈনুল হক বলেছেন, ঘটনা সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলার লক্ষ্মণপুরের বাসিন্দা ওই নারী মঙ্গলবার অভিযোগ করেন, নয় দিন আগে স্থানীয় গোরপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই খাইরুল তার স্বামীকে রাত ১১টার দিকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে আটক করে নিয়ে যান।
সকালে তিনি জানতে পারেন তার স্বামীকে ৫০ বোতল ফেনসিডিলসহ আটকের মামলার দেওয়া হয়েছে।
ওই ভুক্তভোগী বলেন, এরপর সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে এসআই খায়রুলসহ চার ব্যক্তি তার বাড়িতে এসে ডেকে দরজা খুলতে বলেন। তিনি খায়রুলের সঙ্গে তার গ্রামের দুই ব্যক্তিকে দেখে দরজা খোলেন।
ওই নারীর দাবি, তিনি দরজা খুললে এসআই খায়রুল কামরুল নামে এক ব্যক্তিসহ ঘরে ঢোকেন। খায়রুল তাকে বলেন, ৫০ হাজার টাকা দিলে তার স্বামীকে ৫৪ ধারায় আটকের চার্জশিট দেওয়া হবে। তিনি ৫৪ ধারা কী জানতে চান। এসময় এসআই খায়রুল বলেন, এই ধারায় তার স্বামী সহজে জামিন পাবেন।
তিনি অভিযোগ করেন, টাকা দিতে না চাইলে তাদের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে খায়রুল অপর ব্যক্তির উদ্দেশে বলেন- ‘ধর’। এরপর ওই দুজন তাকে ধর্ষণ করে।
এসময় লক্ষ্মণপুর গ্রামের আবদুল লতিফ ও আবদুল কাদের ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন বলেও জানান ওই নারী।
মঙ্গলবার সকালে এই নারী যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে এসে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার কথা বলেন। কিন্তু তার সঙ্গে কোনো পুলিশ না থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অপারগতা প্রকাশ করলেও বারবার একই অনুরোধ করতে থাকেন তিনি।
হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক আবুল কালাম আজাদ জানান, একপর্যায়ে তিনি যশোর কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জকে (ওসি) বিষয়টি জানালে তিনি হাসপাতালে এসে ওই নারীকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে যান।
পুলিশ সুপার মঈনুল হক ওই নারীর কাছ থেকে তার অভিযোগ শুনে সাংবাদিকদের বলেন, ‘অভিযোগটি গুরুতর। বিষয়টি অনুসন্ধানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শার্শা থানায়। সত্যতা পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি আরও জানান, ওই নারীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শার্শা থানার ওসি মশিউর রহমান বলেন, ‘এমন ঘটনা সঠিক নয়। নিশ্চয় কেউ ইন্ধন দিচ্ছে।’
তিনি আরও জানান, সন্ধ্যায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এসআই খায়রুলকে ওই নারীর সামনে হাজির করা হলে তিনি বলেন, ওই রাতে যারা তার বাড়িতে এসেছিল তাদের মধ্যে এই ব্যক্তি ছিল না। তবে যারা ছিল তারা বারবার একজনকে দারোগা খায়রুল নামে ডাকছিল।
অভিযুক্ত এসআই খায়রুল ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘তার স্বামীকে আটক করেছি। তবে সোমবার রাতে ওই বাড়িতে যাইনি। এছাড়া তিনি কামরুল নামে কাউকে চিনি না।’